যজ্ঞেশ্ববরের যজ্ঞ | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

You are currently viewing যজ্ঞেশ্ববরের যজ্ঞ | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

যজ্ঞেশ্ববরের যজ্ঞ । এক সময় যজ্ঞেশ্বরের অবস্থা ভালোই ছিল। এখন প্রাচীন ভাঙা কোঠাবাড়িটাকে সাপব্যাঙ-বাদাড়ের হতে সমপণ করিয়া খোড়ো ঘরে ভগবদ্গীতা লইয়া কালযাপন করিতেছেন । এগারো বৎসর পবে তাঁহার মেয়েটি যখন জন্মিয়ছিল তখন বংশের সৌভাগ্যশশী কৃষ্ণপক্ষের শেষ কলায় আসিয়া ঠেকিয়াছে। সেইজন্য সাধ করিয়া মেয়ের নাম রাখিয়াছিলেন কমলা । ভাবিয়াছিলেন, যদি এই কৌশলে ফাঁকি দিয়া চঞ্চলা লক্ষয়ীকে কন্যারাপে ঘরে ধরিয়া রাখিতে পারেন। লক্ষী সে”ফন্দিতে ধরা দিলেন না, কিন্তু মেয়েটির মুখে নিজের শ্রী রাখিয়া গেলেন। বড়ো সন্দেরী মেয়ে । মেয়েটির বিবাহ সম্পবন্ধে যজ্ঞেশ্বরের যে থব উচ্চ আশা ছিল তাহা নহে। কাছাকাছি যে-কোনো একটি সৎপাত্রে বিবাহ দিতে তিনি প্রস্তুত ছিলেন। কিন্তু তাঁহার জ্যাঠাইমা তাঁহার বড়ো আদরের কমলাকে বড়ো ঘর না হইলে দিবেন না, পণ করিয়া বসিয়া আছেন। তাঁহার নিজের হাতে অলপ-কিছু সংগতি ছিল, ভালো পাত্র পাইলে তাহা বাহির করিয়া দিবেন, সিথর করিয়াছেন। অবশেষে জ্যাঠাইমার উত্তেজনায় শাসাধ্যয়নগঞ্জিত শান্ত পল্লিগহ ছাড়িয়া যজ্ঞেশ্বর পাত্রসন্ধানে বাহির হইলেন। রাজশাহিতে তাঁহার এক আত্মীয়-উকিলের বাড়িতে গিয়া আশ্রয় লইলেন। এই উকিলের মক্কেল ছিলেন জমিদার গৌরসন্দর চৌধুরী। তাঁহার একমাত্র পত্র বিভূতিভূষণ এই উকিলের অভিভাবকতায় কলেজে পড়াশনা করিত। ছেলেটি কখন যে মেয়েটিকে আসিয়া দেখিয়াছিল তাহা ভগবান প্রজাপতিই জানিতেন। কিন্তু প্রজাপতির চক্ৰান্ত যজ্ঞেশ্বরের বঝিবার সাধ্য ছিল না। তাই বিভূতি সম্বন্ধে তাঁহার মনে কোনোপ্রকার দরোশা পথান পায় নাই। নিরীহ যজ্ঞেশ্বরের অল্প আশা, অলপ সাহস ; বিভূতির মতো ছেলে যে তাঁহার জামাই হইতে পারে এ তাঁহার সম্ভব বলিয়া বোধ হইল না। উকিলের যত্নে একটি চলনসই পায়ের সন্ধান পাওয়া গেছে। তাহার বধিসন্ধি না থাক বিষয়-আশয় আছে। পাস একটিও দেয় নাই বটে কিন্তু কালেক্টরিতে মিস্টান্ন ও নাটোরের কাঁচাগোল্লা খাইয়া গেল। বিভূতি তাহার অনতিকাল পরে আসিয়৷ খবর শুনিলেন। যজ্ঞেশ্বর মনের আনন্দে তাঁহাকেও কাঁচাগোল্লা খাওয়াইতে উদ্যত সেইদিনই সন্ধ্যাবেলায় উকিলবাব বিভূতির কাছ হইতে এক পয় পাইলেন। মমণ্ট এই যজ্ঞেশ্বরের কন্যাকে তাহার বড়ো পছন্দ এবং তাহাকে সে বিবাহ করিতে উৎসকে । যজ্ঞেৰয়ের স্বজ্ঞ আমিই আমার আত্মীয়কন্যার সহিত তাঁহার ছেলের বিবাহের চক্লাস্ত করিতেছি।” অত্যন্ত ব্যস্ত হইয়া তিনি যজ্ঞেশ্বরকে দেশে পাঠাইলেন, এবং পাবোন্ত পারটির অভিভাবকমহাশয় পড়াশনা ছাড়া আর-কোনো দিকে মন দিতে বিশেষ করিয়া নিষেধ করিলেন। শনিয়া রাগে বিভূতির জেদ চার গণ বাড়িয়া গেল। বিবাহের আয়োজন উদ্যোগ চলিতেছে এমন সময় একদিন যজ্ঞেশবরের খোড়ো ঘরে বিভূতিভূষণ স্বয়ং আসিয়া উপস্থিত। যজ্ঞেশ্ববর ব্যস্ত হইয়া কহিলেন, “এসো, বাবা, এসো।” কিন্তু কোথায় বসাইবেন, কাঁ খাওয়াইবেন, কিছুই ভাবিয়া পাইলেন না। এখানে নাটোরের কাঁচাগোল্লা কোথায় । – বিভূতিভূষণ যখন নানের পাবে রোয়াকে বসিয়া তেল মাখিতেছেন তখন জ্যাঠাইমা তাঁহার রজতগিরিনিন্ড গোঁর পটে দেহটি দেখিয়া মাখ হইলেন। যজ্ঞেশ্বরকে ডাকিয়া কহিলেন, “এই ছেলেটির সঙ্গে আমাদের কমলের বিবাহ হয় না কি।” ভীর যজ্ঞেশ্বর বিসফাবিতনেত্ৰে কহিলেন, “সে কি হয়।” জ্যাঠাইমা কহিলেন, “কেন হইবে না। চেষ্টা করিলেই হয়।” এই বলিয়া তিনি বাথানপাড়ার গোয়ালাদের ঘর হইতে ভালো ছানা ও ক্ষীর আনাইয়া বিবিধ আকার ও আয়তনের মোদক-নিমাণে প্রবত্ত হইলেন । মানাহারের পর বিভূতিভূষণ সলজে সসংকোচে নিজের বিবাহের প্রস্তাব উত্থাপন করিলেন। যজ্ঞেশ্বর আনন্দে ব্যাকুল হইয়া জ্যাঠাইমাকে সুসংবাদ দিলেন। জ্যাঠাইমা শান্ত মাখে কহিলেন, “তা বেশ হয়েছে, বাপ, কিন্তু তুমি একটা ঠাণ্ডা হও ।” তাঁহার পক্ষে এটা কিছুই আশাতীত হয় নাই। যদি কমলার জন্য এক দিক হইতে কাবলের আমীর ও অন্য দিক হইতে চীনের সম্রাট তাঁহার বারুখ হইভ তিনি আশ্চৰ্য হইতেন না। ক্ষীণাশবাস যজ্ঞেশ্বর বিভূতিভূষণের হাত ধরিয়া বলিতে লাগিলেন, “দেখো বাবা” বিবাহের প্রস্তাব পাকা করিয়া বিভূতিভূষণ তাঁহার বাপের কাছে আসিয়া উপস্থিত হইলেন। গৌরসন্দর নিজে নিরক্ষর ছিলেন বলিয়া শিক্ষিত ছেলেটিকে মনে মনে বিশেষ খাতির করিতেন। তাঁহার কোনো আচরণে বা মতে পাছে তাঁহার ছেলের কাছে সুশিক্ষা বা শিষ্টতার অভাব ধরা পড়ে এই সংকোচ তিনি দরে করিতে পারিতেন না। তাঁহার একমাত্র প্রাণাধিক পায় যেন বাপকে মনে মনে ধিক্কার না দেয়, বেন অশিক্ষিত বাপের বড়েঘরের মেয়ে চাই।” গৌরসন্দর দায়ে পড়িয়া মত দিলেন কিন্তু মনে মনে যজ্ঞেশ্বরের প্রতি অত্যন্ত রাগ করিলেন । তখন দই পক্ষে কথাবাত চলিতে লাগিল। আর-সব ঠিক হইল কিন্তু বিবাহ হইবে কোথায় তাহা লইয়া কিছুতেই নিপত্তি হয় না। গৌরসন্দর এক ছেলের বিবাহে খাব ধামধাম করিতে চান, কিন্তু বড়াশিবতলার সেই খোড়ো ঘরে সমস্ত ধামধাম ব্যথ হইয়া যাইবে। তিনি জেদ করিলেন, তাঁহারই বাড়িতে বিবাহসভা হইবে। শনিয়া মাতৃহীনা কন্যার দিদিমা কান্না জড়িয়া দিলেন। তাঁহাদেরও তো এক সময় সাদিন ছিল, আজ লক্ষী বিমখ হইয়াছেন বলিয়া কি সমস্ত সাধ জলাঞ্জলি দিতে হইবে, পিতৃপরিষের মান বজায় থাকিবে না ? সে হইবে না ; আমাদের ঘর খোড়ো হউক আর যাই হউক, এইখানেই বিবাহ দিতে হইবে। নিরীহপ্রকৃতি যজ্ঞেশ্বর অত্যন্ত বিধায় পড়িয়া গেলেন। অবশেষে বিভূতিভূষণের চেষ্টায় কন্যাগ হেই বিবাহ সিথর হইল। ইহাতে গৌরসন্দর এবং তাঁহার দলবল কন্যাকতার উপর আরও চটিয়া গেলেন। সকলেই স্থির করিলেন, পধি’ত দরিদ্রকে অপদস্থ করিতে হইবে । বরযাত্র যাহা জোটানো হইল তাহা পল্টনবিশেষ। এ সবধে গৌরসন্দর ছেলের কোনো পরামর্শ লইলেন না। বৈশাখ মাসে বিবাহের দিন স্থির হইল। যজ্ঞেশ্বর তাহার স্বপোবশিষ্ট যথাসব সব পণ করিয়া আয়োজন করিয়াছে। নতন আটচালা বধিয়াছে, পাবনা হইতে ঘি ময়দা চিনি দধি প্রভৃতি আনাইয়াছে। জ্যাঠাইমা তাঁহার যে গোপন পজির বলে বগহেই বিবাহপ্রস্তাবে জেদ করিয়াছিলেন তাহার প্রায় শেষ পয়সাটি পর্যন্ত বাহির করিয়া দিয়াছেন । এমন সময় দভাগার অদষ্টরুমে বিবাহের দইদিন আগে হইতে প্রচণ্ড দ্যযোগ আরম্ভ হইল। ঝড় যদি-বা থামে তো বন্টি থামে না, কিচক্ষণের জন্য যদি-বা নরম পড়িয়া আসে আবার বিগণ বেগে আরম্ভ হয়। এমন বর্ষণ বিশ পাঁচশ বছরের মধ্যে কেহ দেখে নাই । গৌরসন্দর পাব হইতেই গুটিকতক হাতি ও পালকি স্টেশনে হাজির রাখিয়াছিলেন। আশপাশের গ্রাম হইতে যজ্ঞেশ্বর ছইওয়ালা গোরার গাড়ির জোগাড় করিতে লাগিলেন। দুদিনে গাড়োয়ানরা নড়িতে চায় না, হাতে পায়ে ধরিয়া বিগণ মলে কবল করিয়া যজ্ঞেশ্বর তাহাদের রাজি করিলেন। বরষাত্রের মধ্যে যাহাদিগকে গোরর গাড়িতে চড়িতে হইল তাহারা চটিয়া আগন হইল। গ্রামের পথে জল দাঁড়াইয়া গেছে। হাতির পা বসিয়া যায়, গাড়ির চাকা ঠেলিয়া রাখিল। হতভাগ্য যজ্ঞেশ্বরকে এই অসাময়িক বঙ্কির জন্য জবাবদিহি করিতে হইবে। ঘর সদলবলে কনকিতাঁর কুটিরে আসিয়া গেছিলেন। অভাবনীয় লোকসমান্ন দেখিয়া গহস্বামীর বকে দমিয়া গেল। ব্যাকুল স্বজ্ঞেশ্বর কাহাকে কোথায় বসাইকেন ভাবিয়া পান না, কপালে করাঘাত করিয়া কেবলই বলিতে থাকেন, “বড়ো কষ্ট দিলাম পড়িতেছে। বৈশাখ মাসে যে এমন শ্রাবণধারা বহিবে তাহা তিনি বনেও আশঙ্কা করেন নাই। গণ্ডগ্রামের ভদ্র অভদ্র সমস্ত লোকই যজ্ঞেশ্বরকে সাহায্য করিতে উপস্থিত হইয়াছিল ; সংকীর্ণ পথানকে তাহারা আরও সংকীর্ণ করিয়া তুলিল এবং ব্যষ্টির কল্লোলের উপর তাহাদের কলরব যোগ হইয়া একটা সমদ্রমন্থনের মতো গোলমালের উৎপত্তি হইল। পল্লিবদ্ধগণ ধনী অতিথিদের সম্মাননার উপযুক্ত উপায় না দেখিয়া যাহাকে-তাহাকে কুমাগতই জোড়হন্তে বিনয় করিয়া বেড়াইতে লাগিল । বরকে যখন অন্তঃপারে লইয়া গেল তখন ক্লন্ধ বরযাত্রীর দল রব তুলিল, তাহাদের ক্ষুধা পাইয়াছে, আহার চাই। মুখ পাংশবেণ করিয়া যজ্ঞেশ্ববর গলায় কাপড় দিয়া সকলকে বলিলেন, “আমার সাধ্যমত যাহা-কিছর আয়োজন করিয়াছিলাম সব জলে ভাসিয়া গেছে ।” দ্রব্যসামগ্রী কতক পাবনা হইতে পথের মধ্যে কতক-বা ভগ্নপ্রায় পাকশালায় গলিয়া গলিয়া উনান নিবিয়া একাকার হইয়া গেছে। সহসা উপযুক্ত পরিমাণ আহার্য সংগ্ৰহ করা যাইতে পারে বড়াশিবতলা এমন গ্রামই নহে। গৌরসন্দর যজ্ঞেশবরের দরগতিতে খুশি হইলেন। কহিলেন, “এতগলা মানুষকে তো অনাহারে রাখা যায় না, কিছ তো উপায় করিতে হইবে।” বরযাত্রগণ খেপিয়া উঠিয়া মহা হাঙ্গামা করিতে লাগিল। কহিল, “আমরা স্টেশনে গিয়া ট্রেন ধরিয়া এখনই বাড়ি ফিরিয়া যাই।” যজ্ঞেশবর হাত জোড় করিয়া কহিলেন, “একেবারে উপবাস নয়। শিবতলার ছানা বিখ্যাত। উপযুক্ত পরিমাণে ছানা কদমা সংগ্রহ আছে। আমার অন্তরের মধ্যে যাহা হইতেছে তাহা অন্তষামীই জানেন ।” যজ্ঞেশবরের দরগতি দেখিয়া বাথানপাড়ার গোয়ালারা বলিয়াছিল, “ভয় কী ঠাকুর, ছানা যিনি যত খাইতে পারেন আমরা জোগাইয়া দিব।” বিদেশের বরযাত্রীগণ না খাইয়া ফিরিলে শিবতলা গ্রামের অপমান ; সেই অপমান ঠেকাইবার জন্য গোয়ালারা প্রচুর ছানার বন্দোবস্ত করিয়াছে। বরযাত্রগণ পরামর্শ করিয়া জিজ্ঞাসা করিল, “যত আবশ্যক ছানা জোগাইতে পরিবে তো ?” যজ্ঞেশ্বর কথঞ্চিৎ আশান্বিত হইয়া কহিল, “তা পারিব।” “আচ্ছা, তবে আনো” বলিয়া বরযাত্ৰগণ বসিয়া গেল। গৌরসন্দর বসিলেন না, তিনি নীরবে এক প্রান্তে দাঁড়াইয়া কৌতুক দেখিতে লাগিলেন। আহারস্থানের চারি দিকেই পাকরিণী ভরিয়া উঠিয়া জলে কাদায় একাকার হইয়া গেছে। যজ্ঞেশবর যেমন-যেমন পাতে ছানা দিয়া যাইতে লাগিলেন তৎক্ষণাৎ বরযাত্রগণ তাহা কাঁধ ডিঙাইয়া পশ্চাতে কাদার মধ্যে টপটপ করিয়া ফেলিয়া দিতে লাগিল। উপায়বিহীন যজ্ঞেশ্বরের চক্ষ জলে ভাসিয়া গেল। বারবার সকলের কাছে জোড়হাত করিতে লাগিলেন ; কহিলেন, “আমি অতি ক্ষুদ্র ব্যক্তি, আপনাদের নিযাতনের যোগ্য নই।” একজন শকেহাস্য হাসিয়া উত্তর করিল, “মেয়ের বাপ তো বটেন, সে অপরাধ যায় কোথায়।” যজ্ঞেশ্বরের সবগ্রামের বন্ধগণ বারবার ধিক্কার করিয়া বলিতে লাগিল, “তোমার যেমন অবস্থা সেইমত ঘরে কন্যাদান করিলেই এ দগতি ঘটিত না।” এ দিকে অন্তঃপরে মেয়ের দিদিমা অকল্যাণশঙ্কাসত্ত্বেও আশ্র সম্বরণ করিতে পারিলেন না। দেখিয়া মেয়ের চোখ দিয়া জল পড়িতে লাগিল। যজ্ঞেশ্বরের জ্যাঠাইমা আসিয়া বিভূতিকে কহিলেন, “ভাই, অপরাধ যা হইবার তা তো হইয়া গেছে, এখন মাপ করো, আজিকার মতো শুভকম সম্পন্ন হইতে দাও।” এ দিকে ছানার অন্যায় অপব্যয় দেখিয়া গোয়ালার দল রাগিয়া হাঙ্গামা করিতে উদ্যত। পাছে বরযাত্রদের সহিত তাহাদের একটা বিবাদ বাধিয়া যায় এই আশঙ্কায় যজ্ঞেশ্বর তাহাদিগকে ঠাণ্ডা করিবার জন্য বহতর চেষ্টা করিতে লাগিলেন। এমন সময় ভোজনশালায় অসময়ে বর আসিয়া উপস্থিত। বরযাত্ররা ভাবিল, বর বঝি রাগ করিয়া অন্তঃপর হইতে বাহির হইয়া আসিয়াছেন ; তাহাদের উৎসাহ বাড়িয়া উঠিল। বিভূতি রাধকণ্ঠে কহিলেন, “বাবা, আমাদের এ কীরকম ব্যবহার ” বলিয়া একটা ছানার থালা স্বহস্তে লইয়া তিনি পরিবেশনে প্রবত্ত হইলেন। গোয়ালাদিগকে বলিলেন, “তোমরা পশ্চাৎ দাঁড়াও, কাহারও ছানা যদি পাঁকে পড়ে তো সেগলো আবার পাতে তুলিয়া দিতে হইবে।” গৌরসন্দরের মাখের দিকে চাহিয়া দই-একজন উঠিবে কি না ইতস্তত করিতেছিল—বিভূতি কহিলেন, “বাবা, তুমিও বসিয়া যাও, অনেক রাত হইয়াছে।” গৌরসন্দর বসিয়া গেলেন। ছানা যথাস্থানে পেছিতে লাগিল।

Leave a Reply