Amader Choto Nodi | আমাদের ছোট নদী

You are currently viewing Amader Choto Nodi | আমাদের ছোট নদী

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা আমাদের ছোট নদী (Amader Choto Nodi) কবিতাটি একটি বহুল প্রচলিত সকলের প্রিয় কবিতা। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছোটদের জন্য অনেক কবিতা লিখেছেন তার মধ্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা এই কবিতাটি অন্যতম। এই কবিতাটিতে একটি ছোট নদীর কথা অর্থাৎ সেই নদীটির বর্ণনা এবং সেখানকার মানুষজনের কাজকর্মের কথা, আমাদের কাছে এই কবিতাটি তুলে ধরেছেন।

আমাদের ছোট নদী | Amader Choto Nodi

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আমাদের ছোটো নদী চলে বাঁকে বাঁকে
বৈশাখ মাসে তার হাঁটু জল থাকে।
পার হয়ে যায় গরু, পার হয় গাড়ি,
দুই ধার উঁচু তার, ঢালু তার পাড়ি।

চিক্ চিক্ করে বালি, কোথা নাই কাদা,
একধারে কাশবন ফুলে ফুলে সাদা।
কিচিমিচি করে সেথা শালিকের ঝাঁক,
রাতে ওঠে থেকে থেকে শেয়ালের হাঁক।

আর-পারে আমবন তালবন চলে,
গাঁয়ের বামুন পাড়া তারি ছায়াতলে।
তীরে তীরে ছেলে মেয়ে নাহিবার কালে
গামছায় জল ভরি গায়ে তারা ঢালে।

সকালে বিকালে কভু নাওয়া হলে পরে
আচলে ছাঁকিয়া তারা ছোটো মাছ ধরে।
বালি দিয়ে মাজে থালা, ঘটিগুলি মাজে,
বধূরা কাপড় কেচে যায় গৃহকাজে।

আষাঢ়ে বাদল নামে, নদী ভর ভর
মাতিয়া ছুটিয়া চলে ধারা খরতর।
মহাবেগে কলকল কোলাহল ওঠে,
ঘোলা জলে পাকগুলি ঘুরে ঘুরে ছোটে।
দুই কূলে বনে বনে পড়ে যায় সাড়া,
বরষার উৎসবে জেগে ওঠে পাড়া।।

আমাদের ছোট নদী কবিতাটির সারাংশ:

এই কবিতায় কবি একটি ছোট ও সরু নদীর কথা আমাদের কাছে তুলে ধরেছেন। তিনি এই নদীটিকে তাদের নিজেদের নদী বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন যে এই নদীটি খুবই সরু ছিল এবং বৈশাখ মাসে তাতে সামান্য পরিমান জল থাকতো। সেই নদী দিয়ে গরুর গাড়ি পার হয়ে যেত।

নদীতে বালি চিক চিক করতো এবং কোথাও কাদা দেখা যেত না। নদীর একধারে কাশবন দিয়ে ভরে থাকতো, শালিকের কিচিমিচি শোনা যেত ও রাতে শেয়ালের হাঁক শোনা যেত।

নদীর পাড়ে আমবন তালবন দেখা যেত। সেখানে বামুন পাড়া ছিল। দুপুর বেলা নাহিবার সময় ছেলে মেয়ে দলে দলে নদীতে স্নান করতে আসতো। এবং তারা নদীতে আচল দিয়ে ছেঁকে মাছ ধরত।

কিন্তু বর্ষাকালে নদীতে যখন জাল ভরে যায় তখন প্রচন্ড বেগে নাদির জল বয়ে চলে। চারিদিকে কোলাহল পরে যায়, নাদির দুইধারে সাড়া পড়ে যায়।
কবি আরো বলতে চেয়েছেন যে এ যেন এক বরষার উৎসব যার জন্য সারা পাড়া জেগে ওঠে।

Leave a Reply